জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের তৃতীয় দিনের আলোচনার ‘দিনটি হতাশার’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (১৮ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার মুলতবি শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিষয়টি আজকের আলোচনায় সমাপ্ত করা যায়নি। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে কি না, সেই প্রশ্ন অনেকেই তুলেছেন।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আলোচনাটা আবার করা হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। যেসব রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে বিরোধিতা করেছে তাদের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলাম জাতির স্বার্থে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বার্থে আমারা যাতে নীতিগত জায়গায় একটা ঐকমত্য আসতে পারি আজকের মধ্যে। কিন্তু এটা হতাশাজনক যে আজকের মধ্যে আমরা ঐকমত্য আসতে পারিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রশ্ন রেখেছিলাম এই যে দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন, মানবাধিকার কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ কমিশনগুলো যেগুলো আমরা বিগত সময়ে দেখেছি দলীয়করণ হয়েছে, নির্বাহী বিভাগের আজ্ঞাবহে পরিণত হয়েছিল এবং বিরোধী দল-মত দমনে, ভোটাধিকার হরণেও ভূমিকা রেখেছে। এর থেকে উত্তরণের আসলে উপায় কী? একটা অপশন যেটা সংস্কার কমিশন প্রস্তাবনা করেছে যে একটা এনসিসি অথবা অলপার্টি কাউন্সিল।
যেখানে নিরপেক্ষভাবে ঐকমত্য ও আস্থার ভিত্তিতে আমরা নিয়োগগুলো করতে পারব। আর না হলে আমাদের আরেকটি অপশন শেখ হাসিনার আমলে যেভাবে নিয়োগ হতো সেভাবেই নিয়োগ হবে।
আমরা বিদ্যমান সিস্টেমটা রেখে দেব নাকি আমরা পরিবর্তন চাইব—এ বিষয়ে ঐকমত্যে আসা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি শেখ হাসিনার আমলের বিরোধী রাজনৈতিক দল কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন আইন নিয়ে ব্যাপক বিরোধিতা করেছিল, এই আইনগুলো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল এবং ভবিষ্যতে তারা ক্ষমতায় গেলে সংস্কারের প্রস্তাবনা ছিল।
কিন্তু আজকের আলোচনায় আমাদের কাছে মনে হয়েছে সেই দলগুলোর কাছ থেকে বিকল্প প্রস্তাব আমরা পাইনি। সে কারণে ঐকমত্যে আসা যায়নি।’
তিনি আরো বলেন, ‘কিছু দল বিরোধিতা করেছে, যারা ঐকমত্য কমিশনে এনসিসির পক্ষে বলে এসেছিলেন, কিন্তু আজকের আলোচনায় তারা হঠাৎ করেই অবস্থান পরিবর্তন করেছেন এবং কেন অবস্থান পরিবর্তন করেছেন সেই ব্যাখ্যাও আমরা পাইনি।
তো সাার্বিকভাবে আমাদের জন্য আজকের দিনটা হতাশার। আমরা আশা করেছিলাম এনসিসির বিষয়ে নীতিগত একটা ঐকমত্যে আসা যাবে।’
তিনি বলেন, এনসিসি গঠন না হলে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো আগের নিয়মে চলবে বলে শঙ্কা ও সংশয় তৈরি হয়েছে।