আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে ফরিদপুরের সালথায় আলোচনায় এসেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুদ্দীন মাতুব্বর। সাংবাদিক ডেকে দলটি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপির একনিষ্ঠ কর্মী’।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের মাদ্রাসা গট্টি এলাকায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
স্থানীয় সাংবাদিক ও দলীয় নেতাকর্মীদের সামনে নূরুদ্দীন মাতুব্বর বলেন, আমি ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপির কমিটিতে ছিলাম। গট্টি ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে আমি কোনো দিন জড়িত ছিলাম না। কে বা কারা আমাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে রেখেছে, আমি জানি না।
তিনি আরও বলেন, আমি ১৯৮৬ সাল থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমানের নেতৃত্বে কাজ করেছি। দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতি করছি। অথচ আমার নাম ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদ দিয়ে আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাই আমি এ পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি এবং স্পষ্টভাবে জানাতে চাই আমি বিএনপির কর্মী ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।
আবেগঘন কণ্ঠে নূরুদ্দীন মাতুব্বর আরও বলেন, আওয়ামী লীগের চাপে বহু হামলা ও মামলার স্বীকার হয়েছি। মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছি। আমাকে চাপে ফেলে তাদের দলে নাম লিখিয়েছে। অথচ আমি কখনো আওয়ামী লীগ করিনি। প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমান ছিলেন আমার রাজনৈতিক গুরু। তিনি একাধিকবার আমার বাড়িতে এসেছেন এবং আমাদের বাড়িতে খেয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, একটি কুচক্রী মহল আমাকে আওয়ামী লীগের নেতা বানিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছে। এর মাধ্যমে আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার চেষ্টা চলছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং আপনাদের কাছে বিচার চাই। আমার নাম যদি কোনো আওয়ামী লীগের কমিটিতে থাকে, আজ থেকেই তা প্রত্যাহার করলাম।
বর্তমানে নূরুদ্দীন মাতুব্বর গট্টি ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য। তার বাড়ি ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি গ্রামে।
উপজেলা বিএনপির এক নেতা জানান, নূরুদ্দীন মাতুব্বর দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, তিনি বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন। তবে এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় বিএনপি কর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নুর আলম, ইউনুস মোল্লা, সাবান খান, ইসহাক মাতুব্বর, সায়েদ মীর, আফতার খান, শুকুর খান, পাঞ্জু মাতুব্বরসহ শতাধিক নেতাকর্মী।