ভাগ্য বদলের আশায় জমি বেচে ১৬ লাখ টাকা চুক্তিতে, ইতালি যাওয়ার স্বপ্নে ঘর ছেড়েছিলেন শরীয়তপুরের আলতাফ ও আহসান। ফিরে এসেছেন ঋণের বোঝা আর ভয়াবহ নির্যাতনের দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে।এ ঘটনায় তাদের মুক্তিপণ গুণতে হয়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, স্থানীয় দালাল হারুন লস্কর ও তার ছেলে ইমন লস্করের প্রতারণার শিকার হয়ে হারাতে হয়েছে সব। ভারত ঘুরে এক মাস রাখা হয় তাদের শ্রীলঙ্কায়। এরপর দুবাই, মিশর হয়ে নেয়া হয় লিবিয়ার বেনগাজীতে। তাদেরকে বেচে দেয়া হয় মাফিয়াদের কাছে। সেখানেই আটকে রেখে মুক্তিপণের জন্য চলে অমানবিক নির্যাতন। ধাপে ধাপে জনপ্রতি ৬৪ লাখ টাকা কোরে মুক্তিপণ দেয়ার পর, ৭মে দেশে ফিরেছেন দুজন।
আহসান উল্লাহ ও আলতাফ হোসেন জানান, তাদের আটকে রেখে মারধরের পাশাপাশি অমানবিক নির্যাতন করতো। এসব স্মৃতি মনে হলে এখনও শিউরে উঠেন তারা।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, প্রলোভন দেখিয়ে ইতালির কথা বলে স্থানীয় লোক ঠিক করে হারুন লস্কর নামে দালাল চক্রের এক সদস্য। লিবিয়ায় নিয়ে মাফিয়া ও মানব পাচারকারীদের সহায়তায় মুক্তিপণ আদায় করে ইমন লস্কর। জমি বিক্রি আর সুদের বিনিময়ে আনা টাকায়, ছেলেকে জীবিত ফিরে পেলেও, পাওনাদারদের চাপে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছে পরিবার।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হারুন লস্কর। তিনি বলেন, কোনো টাকাই নেননি তিনি। এসব বিষয়ে কোনো প্রমাণ নেই বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হলেও, জেলায় মানবপাচার চক্রের একাধিক সদস্য এখনও সক্রিয়। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না উল্লেখ করে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম জানান, কিছু কিছু চক্র এই কাজ করে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত আছে।
পুলিশ ও গণমাধ্যমের তথ্যমতে, অবৈধ পথে লিবিয়া হয়ে ইতালী যেতে এখন পর্যন্ত শরীয়তপুরের অন্তত ২৪ যুবক নিখোঁজ রয়েছে।